সৈয়দ মুজতবা আলী (১৯০৪-১৯৭৪)
প্রখ্যাত রম্য রচয়িতা, আজিজুল হক কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সৈয়দ মুজতবা আলী কর্মসূত্রে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের স্ফূরণ ঘটিয়েছেন তাঁর বিভিন্ন রচনায়। সাহিত্যিক রসবোধ, বিচিত্র জীবনপ্রবাহের নানা অনুষঙ্গ কৌতুক ও ব্যঙ্গ রসাবৃত করে উপস্থাপন তাঁর রচনার মূখ্য প্রবণতা। তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে তাঁর ছিল বিশেষ পাণ্ডিত্য। তিনি প্রায় ১৮টি ভাষা জানতেন। ফলে তাঁর রচনায় প্রচুর আরবি-ফারসি শব্দ ব্যবহার করতেন।
সৈয়দ মুজতবা আলীর সাহিত্যকর্ম
| সাহিত্যিক উপাদান | সাহিত্যিক তথ্য |
|---|---|
| জন্ম | সৈয়দ মুজতবা আলী ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে করিমগঞ্জ, সিলেটে [ব্রিটিশ ভারতে সিলেট আসামের অন্তর্ভুক্ত ছিল, সুতরাং পরীক্ষায় জন্মস্থানের নাম আসামও থাকতে পারে। সূত্র: বাংলা একাডেমি চরিতাভিধান] জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস- হবিগঞ্জের (মৌলভীবাজার) উত্তরসূর গ্রাম। |
| বংশধর | তিনি ছিলেন মধ্যযুগের কবি সৈয়দ সুলতানের বংশধর। |
| কর্মজীবন | তিনি কাবুলের কৃষিবিজ্ঞান কলেজে ফারসি ও ইংরেজি ভাষার প্রভাষক (১৯২৭) হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে বরোদা কলেজের তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক পদে যোগদান (১৯৩৫), বগুড়া আজিজুল হক কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান (১৯৪৯), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামের ইতিহাস বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান (১৯৫০) এবং সর্বশেষ বিশ্বভারতীর রিডার হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৬৫ সালের ৩০ জুন অধ্যাপনার কর্ম থেকে অবসর গ্রহণ করেন । |
| উপসম্পাদকীয় | আনন্দবাজার পত্রিকায় ‘ সত্যপীর ’ ও হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় ‘ রায়পিথোরা ' নামে উপসম্পাদকীয় রচনা করতেন। |
| নজরুল গ্রন্থের ভূমিকা | তিনি কাজী নজরুল ইসলামের ‘রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম’ গ্রন্থের ভূমিকা লেখেন । |
| বিখ্যাত ভ্রমণকাহিনি | মুজতবা আলীর বিখ্যাত ভ্রমণকাহিনির নাম: ‘দেশে-বিদেশে' (১৯৪৯): এটি তাঁর প্রথম গ্রন্থ। এতে কাবুল শহরের কাহিনি স্থান পেয়েছে। ‘জলে ডাঙায়' (১৯৬০): এটি একাধারে ভ্রমণকাহিনি ও শিশু-কিশোর উপন্যাস । |
| সাহিত্যকর্ম | মুজতবা আলীর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মসমূহ: উপন্যাস: ‘অবিশ্বাস্য' (১৯৫৪), ‘শবনম' (১৯৬০),‘শহর-ইয়ার’(১৯৭০), ‘তুলনাহীনা'। রম্যরচনা: ‘পঞ্চতন্ত্র' (১৯৫২), 'ময়ূরকণ্ঠী' (১৯৫২), 'বড়বাবু’ (১৯৬৫), ‘কত না অশ্রুজল' (১৯৭১)। ছোটগল্প: ‘চাচা-কাহিনি' (১৯৫২), ‘টুনিমেম' (১৯৬৩), ‘রসগোল্লা’[মূলগল্প: ইংরেজি Custom House], ‘পাদটীকা', ‘রাজা-উজির’, ‘ধূপছায়া’। |
| ভ্রমণকাহিনির পরিচয় | সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রথম গ্রন্থ ‘‘দেশে-বিদেশে” (১৯৪৯)। লেখক নিজে বিভিন্ন দেশে বিশেষত আফগানিস্তানের কাবুলে অবস্থান ও ভ্রমণ করে যে বিচিত্র অভিজ্ঞতা লাভ করেছেন, তার পরিচয় অত্যন্ত সাবলীল ভাবে উপস্থাপন করেছেন এ গ্রন্থে। কাবুল শহরের রাজনৈতিক ঝড়ো হাওয়া, সাধারণ মানুষের জীবন, সাংস্কৃতিক জীবনের বিভিন্ন দিক, অপরিচিত দেশের নানা বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে আন্তরিক ভঙ্গিতে। কলকাতা থেকে পেশোয়ার হয়ে কাবুল যাওয়ার বর্ণনা দিয়ে শুরু এবং কাবুল ত্যাগের করুণ কাহিনির মধ্য দিয়ে “বহুদিন ধরে সাবান ছিল না বলে আবদুর রহমানের পাগড়ি ময়লা। কিন্তু আমার মনে হয় চতুর্দিকের বরফের চেয়ে শুভ্রতর আবদুর রহমানের পাগড়ি আর শুভ্রতর আবদুর রহমানের হৃদয়।” এ বাক্যের মাধ্যমে কাহিনির সমাপ্তি ঘটেছে। সাংবাদিক নজেস আফরোজ In a Land Far From Home : A Bengali in Afganistan নামে এটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন । |
| মৃত্যু | তিনি ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৪ সালে ঢাকায় মারা যান । |
বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশ্নোত্তর
১. ‘দেশে বিদেশে' বইটির লেখক কে ? [ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক : ০০]
- মুনীর চৌধুরী
- সৈয়দ মুজতবা আলী
- সৈয়দ শামসুল হক
- কবি আবদুল কাদের
২. ‘পঞ্চতন্ত্র’, ‘ময়ূরকণ্ঠী’ গ্রন্থদ্বয়ের লেখক কে ? [ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক : ১৯]
- সৈয়দ আলী আহসান
- সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
- সৈয়দ মুজতবা আলী
- সৈয়দ আশরাফ আলী
৩. সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রবন্ধ গ্রন্থ কোনটি ? [ ৩৪তম বিসিএস ]
- শাশ্বত
- পঞ্চতন্ত্র
- কালান্তর
- প্রবন্ধ সংগ্রহ
৪. কোনটি সৈয়দ মুজতবা আলীর রচিত গ্রন্থ ? [ পিএসসি এর সহকারী পরিচালক :০৬]
- চাচা কাহিনী
- বরফ গলা নদী
- খেলারাম খেলে যা
- কবি
৫. ‘চাচা কাহিনী’র লেখক কে ? [২৯তম বিসিএস ]
- সৈয়দ শামসুল হক
- শওকত ওসমান
- সৈয়দ মুজতবা আলী
- আবুল মনসুর আহমেদ
৬. ‘পাদটীকা’ গল্পটি কে লিখেছেন ? [ পিএসসি এর সহকারী পরিচালক :০৪]
- শওকত ওসমান
- হুমায়ুন আহমেদ
- সৈয়দ মুজতবা আলী
- আনোয়ার পাশা
৭. ‘পঞ্চতন্ত্র’ গ্রন্থটি কার রচনা ? [ ৭ম বিজেএস : ১২]
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- মুহম্মদ আব্দুল হাই
- সৈয়দ মুজতবা আলী
- রাজশেখর বসু
৮. কাজী নজরুল ইসলামের পর সাহিত্য সবচেয়ে বেশী আরবি ফারসি শব্দ ব্যবহার করেন- [প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহকারী অফিসার : ০৫ ]
- আবু সায়ীদ আইউব
- সৈয়দ মুজতবা আলী
- জসীম উদ্দীন
- আহসান হাবীব
৯. সৈয়দ মুজতবা আলীর কোন গ্রন্থটি একাধারে ভ্রমণকাহিনী ও শিশু কিশোর উপন্যাস ? [ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক : ১৯]
- শবনম
- জলে ডাঙায়
- পঞ্চতন্ত্র
- ময়ূরকণ্ঠী
১০. সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে বিদেশে’ বইটিতে কোন শহরের কাহিনী প্রাধান্য পেয়েছে ? [বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক অফিসার : ১২ ]
- দিল্লী
- লাহোর
- তেহরান
- কাবুল
১১. 'শবনম' উপন্যাস কার রচনা ? [ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক : ০৬]
- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
- তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
- বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
- সৈয়দ মুজতবা আলী
১২. রম্য রচনা লেখক হিসেবে সুপরিচিত- [ ঢাবি (খ) : ০৩-০৪ ]
- প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খাঁ
- গাজী শামসুর রহমান
- সৈয়দ মুজতবা আলী
- মুহম্মদ আব্দুল হাই
১৩. কোন গ্রন্থটি সৈয়দ মুজতবা আলীর রচনা নয়- [ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে সাইফার অফিসার : ৯৯]
- টুনি মেম
- তুলনাহীনা
- অবিশ্বাস্য
- পথে-প্রবাসে
১৪. 'দেশে-বিদেশে' কোন শ্রেণীর রচনা ? [ উপজেলা সমাজসেবা অফিসার:০৮]
- আত্মজীবনী
- ভৌগোলিক বিবরণ
- ভ্রমণকাহিনী
- শিক্ষাবিষয়ক
১৫. কোন গ্রন্থটি সৈয়দ মুজতবা আলীর রচনা নয় ? [ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে সাইফার অফিসার: ৯৯]
- টুনিমেম
- তীর্থহীনা
- অবিশ্বাস্য
- পথে-প্রবাসে
১৬. 'শবনম' উপন্যাস কার রচনা ? [ সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক: ০৬]
- মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
- তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
- বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
- সৈয়দ মুজতবা আলী
১৭. 'ময়ূরকণ্ঠী' কোন ধরনের রচনা ? [দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক: ২০ ]
- কাব্যগ্রন্থ
- রম্যরচনা
- উপন্যাস
- ভ্রমণ বৃত্তান্ত
১৮. কোন গ্রন্থটি সৈয়দ মুজতবা আলীর রচনা ? [ খাদ্য অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী: ২২]
- এলেবেলে
- প্রফুল্ল
- প্রতিভার খেলা
- ময়ূরকণ্ঠী